April 25, 2024, 9:56 pm

বন্ধু ফরহাদকে নিয়ে শিমুকে হত্যা করেন নোবেল

অভিনয়শিল্পী রাইমা ইসলাম শিমু হত্যায় স্বামী খন্দকার সাখাওয়াত আলীম নোবেলকে সহায়তা করেন তার বন্ধু আব্দুল্লাহ ফরহাদ, দুজন মিলেই তারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটান বলে জানিয়েছে পুলিশ।

নোবেল ও ফরহাদকে তিন দিন রিমান্ডের পর শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর।

পুলিশ সুপার বলেন, শিমুর স্বজনেরা জানান, নোবেলের বাল্যবন্ধু ফরহাদ ঢাকার একটি মেসে থাকেন। তার তেমন উপার্জন নেই। কয়েকদিন পরপরই তিনি খুব সকালে নোবেলের বাসায় এসে টাকা-পয়সা নিতেন। সেদিনও তিনি সকালে নোবেলের বাসায় যান এবং ওই হত্যাকাণ্ডে নোবেলের সঙ্গে যুক্ত হন।

হুমায়ুন কবীর বলেন, নোবেল ও ফরহাদ বৃহস্পতিবার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এ বিষয়ে পুলিশ আরও তদন্ত করছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নোবেল একসময় নেশায় আসক্ত ছিলেন। এখন তিনি কিডনি ও লিভারের সমস্যাসহ নানা রোগে ভুগছেন। ফলে শারীরিকভাবে তিনি অনেকটাই দুর্বল। রোববার সকালে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ার একপর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হলে শিমুকে একা কাবু করতে পারছিলেন না নোবেল। তখন ফরহাদ বন্ধুর পক্ষ নেন। এক পর্যায়ে শ্বাসরোধে শিমুর মৃত্যু হয়।

অভিনয়শিল্পী রাইমা ইসলাম শিমু পারিবারিক দ্বন্দ্বে খুন হওয়ার কথা শুরু থেকে বলা হলেও কী নিয়ে তাদের বিরোধ, সে বিষয়ে শিমুর আত্মীয়াও কোনো ধারণা দিতে পারেননি।

শিমুর ভাই শহীদুল ইসলাম খোকন জানান, স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্দ্বের কথা জানতাম। শিমুকে নানাভাবে নির্যাতন করত নোবেল। কিন্তু কী নিয়ে দ্বন্দ্ব তা জানি না। রোববার সকালে শিমুর ১৭ বছরের মেয়ে আর পাঁচ বছরের ছেলে ওই বাসাতেই ছিল। তবে তারা কেউ ঘটনা সম্পর্কে কোনো কিছু টের পায়নি।

পুলিশ জানান, রোববার সকাল ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে গ্রিনরোডের বাড়িতে শিমুকে হত্যা করা হয়। পরে নোবেল ও ফরহাদ দুটো বস্তায় শিমুর শরীরের দুপাশ মুড়িয়ে মাঝ বরাবর প্লাস্টিকের সুতা দিয়ে সেলাই করেন।

এরপর বিদ্যুতের সংযোগ বন্ধ করে দিয়ে, বাড়ির দারোয়ানকে নাস্তা আনতে বাইরে পাঠিয়ে বস্তাটি নিচে রাখা নোবেলের গাড়ির পেছনে রাখেন। ওইদিন সকালে তারা লাশ নিয়ে মিরপুরের দিকে যান। কিন্তু সেখানে লাশ ফেলার জায়গা না পেয়ে আবারও বাড়ি ফিরে আসেন।

সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুর হয়ে কেরানীগঞ্জের হজরতপুর এলাকার কদমতলীতে ঝোপের মধ্যে তারা লাশ ফেলে আসেন। হত্যার পরদিন কলাবাগান থানায় গিয়ে স্ত্রী ‘নিখোঁজ’ দাবি করে জিডি করেন নোবেল।

সোমবার দুপুরে স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে কেরানীগঞ্জের হজরতপুর সেতুর কাছে আলিয়াপুর এলাকায় রাস্তার পাশে বস্তাবন্দি লাশটি উদ্ধার করে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। পরে মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে গিয়ে তা শিমুর বলে শনাক্ত করেন তার বড় খোকন।

পুলিশ জানায়, শিমুর লাশ উদ্ধারের পর নোবেলের গাড়িতে পাওয়া সুতার সূত্র ধরে হত্যার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার বিষয়ে পুলিশ নিশ্চিত হয়। ওই সুতা দিয়েই লাশ মোড়ানোর বস্তা সেলাই করা হয়েছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :